ঢাকা, মঙ্গলবার, জানুয়ারী ১৪, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমাবে বিটি বেগুন

রিসালাত আলিফ

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম

কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমাবে বিটি বেগুন

বেগুন একটি জনপ্রিয় সবজি, তবে ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ, বেগুন চাষের অন্যতম প্রধান সমস্যা। দেশের আবহাওয়া এই পোকার জন্য অনুকূল হওয়ায় প্রতি বছর বড় পরিমাণে বেগুন নষ্ট হয়। এ সমস্যা সমাধানে সাধারণত কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এসব সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে বিটি বেগুনের ধারণা সামনে আসে।

 

 

ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা মূলত লার্ভা অবস্থায় বেগুনের ক্ষতি করে। তাছাড়া বিটি বেগুন চাষে কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমবে। বিটি বেগুন, জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফসল, এবং এর পরিচর্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি।

 

 

অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি বলেন, 'বিটি শব্দটি এসেছে Bacillus thuringiensis (Bt) নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত কীটপতঙ্গের (যেমন বেল বোরার) বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। এই ব্যাকটেরিয়া ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা বা লার্ভার অন্ত্র নষ্ট করে দেয়। ফলে পোকা বা লার্ভা মারা যায়। বিজ্ঞানীরা এই ব্যাকটেরিয়ার বিশেষ জিন বেগুনের মধ্যে সংযুক্ত করেছেন, যার ফলে বেগুনটি কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে। যদিও শুরুতে বিটি বেগুন নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল, তবে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ফসল। কীটনাশক ব্যবহার কমার পাশাপাশি এই বেগুন কৃষকের অতিরিক্ত খরচও কমাবে।'

 

 

তিনি আরও বলেন, 'বিটি বেগুন মূলত একটি জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বেগুন, যা Bacillus thuringiensis (Bt) ব্যাকটেরিয়ার জিন ধারণ করে। এটি কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে বেগুনকে রক্ষা করে এবং এর নামকরণ করা হয়েছে সেই জিন (Bt) এর কারণে।'

 

 

বিটি বেগুন নিয়ে সাধারণের ভুল ধারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বিটি বেগুন নিয়ে আমাদের একটি ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, বেগুন খেলে যে পোকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেটি মানুষের ক্ষতিও করতে পারে। কীটনাশক যেমন কীটপতঙ্গের ক্ষতি করে, তেমনি মানুষেরও ক্ষতি করে। কিন্তু বিটি বেগুনের ক্ষেত্রে যে ব্যাকটেরিয়ার জিন ব্যবহার করা হয়, সেটি শুধুমাত্র ওই বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার ক্ষতি সাধন করে। এই জিন মানুষের অন্ত্রে কোনো ক্ষতি করে না, বরং এটি নিরাপদ। চাষের ক্ষেত্রে বিটি বেগুনের জন্য আলাদা কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। এটি সাধারণ বেগুনের মতোই চাষ করা যায় এই বেগুন।'